সমাপিকার জীবনে ললিতপুর এক শাপভ্রষ্ট মোড়ক হয়ে রয়ে যায় ।স্বামী সুপ্রতিমের ব্যবসায়ী হওয়ার স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে যাওয়ার বিষয়টি এক নতুন অজানা আতঙ্ককে ডেকে নিয়ে আসে তাদের জীবনে। ললিতপুরের যে জমিটিতে হোটেল গড়ে ওঠে, সেই জমির অলিন্দে লুকিয়ে ছিল বহু মৃত মানুষের খুলি। ললিতপুরের মানুষের দাবী ছিল, " মৃত মানুষের মাথার খুলি দিঘীর পাড়ের জমিতে পুঁতে দিয়ে আসলে নাকি তারা পুনরায় তাদের পরিবারেই জন্মগ্রহণ করবেন ।" প্রিয় মানুষেরা চলে গেলেও তাদের অস্তিত্বকে পুনরুজ্জীবিত করার এই ভয়ানক প্রয়াস তছনছ করে দিয়েছিল ওই হোটেল ব্যবসায়ীদের ।মৃত মানুষেরা পুনরায় ফিরে আসবে পরিবারের সদস্য হয়ে,এই ভাবধারা নিয়ে বেঁচে থাকা কিছু কুসংস্কারাচ্ছচ্ছন্ন মানুষ নিজের অজান্তেই এক ভয়ঙ্কর বিপদকে ঢেকে আনলেন। মৃতরা জীবিত হয়ে উঠল ।যাদেরকে সকলেই মৃত অবস্থায় দেখেছিল তাদের চাক্ষুষ দেখা যেতে লাগল।এই ঘটনার পরেও তাদের উপদ্রব কমলো না । মৃতদের সাথে সহাবস্থানে ললিতপুরের মানুষদের কোন অসুবিধা ছিলোনা। একে একে নিরীহ মানুষেরা মারা যেতে লাগলেন। তাদের জীবনের গুরুত্ব খুব সাধারন হয়ে উঠল । ললিতপুর মুখ বুজেই রইল । পরিণতি ক্রমে আরও ভয়ঙ্কর রূপ নিলো ।ওই অশিক্ষিত মানুষের কৃতকর্মের ফল ভুগতে হয়েছিল গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র সমাপিকাকেও । প্রেতবিদ্যাচর্চা নিয়ে পড়াশুনা শেষ করে প্রফেসারির কাজ শুরু করার পর সুপ্রতিম এর সাথে বিবাহসূত্রে আবদ্ধ হয়েছিল সমাপিকা। তবে ব্যবসায়ীক মননশীলতার সুপ্রতিম বৈবাহিক সম্পর্কের গভীরতাকে তেমনভাবে বুঝে উঠতে পারেনি। তবে সমাপিকার বিশ্বাস ছিল একদিন না একদিন আর পাঁচটা স্বাভাবিক সম্পর্কের মতই সুপ্রতিমের সাথে সেও সুখে শান্তিতে সংসার করতে পারবে ।কিন্তু একটি অপবিত্র স্থানকে হোটেল নির্মাণের জন্য বেছে নেওয়ার মত চূড়ান্ত ভুলের মাশুল গুনতে হয়েছিল সুপ্রতিমকেও। সে হঠাৎ মারা যাওয়ায় সমাপিকার জীবনে আবার অন্ধকার নেমে এলো ।সেই মৃত্যুরহস্যকে খুঁজে বার করতেই সমাপিকা পাড়ি দিলো সেই অভিশপ্ত ললিতপুরের উদ্দেশ্যে ।সেকি পারবে এই রহস্যের বেড়াজালে পেরিয়ে সত্যকে উন্মুক্ত করতে?নাকি এই কুসংস্কারাচ্ছন্ন মনোভাবকেই সম্বল করে তাকেই সত্য বলে মেনে নিয়ে তাকে বাকি জীবনটা কাটিয়ে দিতে হবে?নাকি তারও পরিণতি হবে সুপ্রতিমের মতোই?জানতে হলে শুনতে থাকুন সঞ্চারী ভট্টাচার্যের হাড়হিম করা গল্প ললিতপুরের খুলির মাঠ ।Read More